🐟 মাছের মাথায় কোটি টাকার গুপ্তধন!

 🐟 মাছের মাথায় কোটি টাকার গুপ্তধন!

পিটুইটারী গ্লান্ড – বদলে দিতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতি

বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্রে ধরা মাছের মাথায় আছে এক অনন্য সম্পদ পিটুইটারী গ্লান্ড। 

এই ক্ষুদ্র হরমোন-উৎপাদনকারী গ্রন্থি বিশ্ববাজারে বিরল ও চাহিদাসম্পন্ন পণ্য হিসেবে পরিচিত।

বিশেষ করে মাছের প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ও উন্নত জাত উৎপাদনে এর ব্যবহার রয়েছে ব্যাপক। সঠিক উদ্যোগ, মানসম্মত প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানি ব্যবস্থাপনায় এই ছোট্ট অঙ্গটি হতে পারে কোটি টাকার রপ্তানি শিল্প।

বাংলাদেশ যদি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, তবে এক নতুন রপ্তানি খাতের দ্বার উন্মোচিত হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে যোগ করবে নতুন গতি।

১. পিটুইটারী গ্লান্ড কী?

মাছের মস্তিষ্কের নিচে থাকা ছোট একটি হরমোন নিঃসরণকারী গ্রন্থি, যা মাছের প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

২. এটি এত দামী কেন?

বিশ্বের ফিশ হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজনন (Induced Breeding) ও ওষুধ গবেষণায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজির দাম ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

৩. কোন মাছের গ্লান্ড বেশি চাহিদাসম্পন্ন?

রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, শিং, মাগুরসহ কার্প ও ক্যাটফিশ জাতের মাছের।

৪. গ্লান্ড সংগ্রহের পদ্ধতি,

মাছের মাথা কেটে মস্তিষ্কের নিচ থেকে গ্লান্ড সাবধানে বের করে পরিষ্কার করে কাঁচা বা ফ্রিজড অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়।

৫. সংরক্ষণের নিয়ম,

মাইনাস ৪০° সেলসিয়াসে ডিপ ফ্রিজে রাখতে হয় অথবা ইথানল সল্যুশনে ডুবিয়ে সংরক্ষণ করা হয়।

৬. সবচেয়ে বেশি চাহিদা কোথায়?

চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে।

৭. বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বৈধ কি না?

হ্যাঁ, তবে মৎস্য অধিদপ্তর ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB) থেকে অনুমতি ও লাইসেন্স নিতে হবে।

৮. লাইসেন্স পাওয়ার ধাপ,

ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন → ট্রেড লাইসেন্স → ভ্যাট নিবন্ধন → ফিশ প্রসেসিং ও এক্সপোর্ট লাইসেন্স।

৯. ক্রেতা বা আমদানিকারকের সাথে যোগাযোগের উপায়,

বিদেশি ফিশ হ্যাচারি, ওষুধ কোম্পানি, মৎস্য রপ্তানিকারক, অনলাইন মার্কেটপ্লেস (যেমন আলিবাবা, অ্যামাজন) এবং দেশের বাইরের এজেন্টদের মাধ্যমে।

১০. ব্যবসা শুরুতে মূলধন,

ছোট পরিসরে ৫০ হাজার টাকাতেও শুরু সম্ভব। বড় স্কেলে গেলে লাখ টাকায় প্রসেসিং ইউনিট তৈরি করা যায়।

১১. বাংলাদেশে বেশি সংগ্রহ হয় যে অঞ্চলগুলোতে

ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, কুমিল্লা ও সিলেট।

১২. বাজার তৈরি করার উপায়,

বিদেশি আমদানিকারকের কাছে নমুনা পাঠানো, ট্রেড ফেয়ারে অংশগ্রহণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার এবং ওয়েবসাইট তৈরি।

১৩. লাভের সম্ভাবনা,

১ কেজি গ্লান্ড বিক্রি করে ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় সম্ভব। বছরে কয়েক কেজি রপ্তানি করেই লাখো টাকা উপার্জন করা যায়।

১৪. রেমিটেন্স আনার সুযোগ,

দেশে থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

১৫. নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ,

মাছের গ্লান্ডের গুরুত্ব শি

খুন, মৎস্য অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিন, মানসম্মত সংরক্ষণ ও রপ্তানি প্রক্রিয়া জানুন, বৈধ লাইসেন্স নিয়ে কাজ শুরু করুন।

বাংলাদেশের ঘরে ঘরে গ্লান্ড সংগ্রহের মাধ্যমে নতুন রপ্তানি বিপ্লব ঘটতে পারে। সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বছরে ৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।

ব্যবসা করুন, দেশকে রেমিটেন্স দিন।

তথ্য ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ করুন স্থানীয় মৎস্য অফিস বা উদ্যোক্তা ফোরামের সাথে।

এ বিষয়ে কোনো ধারণ বা প্রশ্ন থাকলে সরাসরি 

কমেন্ট করতে পারেন